চট্টগ্রামের আর্চবিশপের পালকীয় পত্র

বিশ্ব আহ্বান রবিবার – ২০২০

চট্টগ্রামের আর্চবিশপের পালকীয় পত্র

০১.      ঈশ্বরের পরিকল্পনা

আদিতে মানুষের পতনের পর থেকেই ঈশ্বর তাঁর সন্তানদের পরিত্রাণ সাধন ও সঠিক পরিচালনার জন্য যুগে যুগে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের প্রেরণ করে আসছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “আমি তোমাদের জন্যে আমার মনের মতোই পালক দান করবো; তোমাদের প্রতিপালন করবে তারা জ্ঞানবুদ্ধি দিয়ে।” (জেরেমিয়া ৩:১৫) পুরাতন নিয়মে আমরা পাই, এই উদ্দেশ্যে তিনি ইস্রায়েল জাতির মধ্য থেকে আহ্বান ও মনোনীত করেছিলেন রাজা, যাজক ও প্রবক্তাদের।

নব সন্ধিতে যিশুই নিজের পরিচয় দিয়ে বলেছেন, “আমিই উত্তম মেষপালক”। তাঁর মধ্যেই পূর্ণতা পেয়েছে ঈশ্বরের পালকীয় যত্নের পরিকল্পনা। পিতার কাছ থেকে প্রাপ্ত পালকীয় ও প্রৈরিতিক কাজ চলমান রাখার জন্য যিশু তাঁর শিষ্যদের  আহ্বান ও প্রেরণ করেন। আহ্বান ও প্রেরণের এই ধারাবাহিকতায় বাণী প্রচার, বিশ্বাসের যত্ন ও বিশ্বাসীদের সমাজ গঠন চলমান রয়েছে খ্রিস্টমণ্ডলীতে আজো।

যিশুর স্বর্গারোহনের পর বিশেষতঃ পবিত্র আত্মা অবতরণের পর মণ্ডলী বিস্তার লাভ করতে শুরু করে। বিশ্বাসী ভক্তের মধ্যে কেউ কেউ যিশুকে অধিকতর ঘনিষ্ঠভাবে অনুসরণ ও অনুকরণের উদ্দেশ্যে সংসার ত্যাগী হয়ে বাণী প্রচার ও যিশুকে সাক্ষ্য দিতে শুরু করে। আর এইভাবে শুরু হয় সন্ন্যাসব্রতী জীবন। মণ্রডলী ইতিহাসে বিশ্বাস বিস্তার ও বিশ্বাসের পরিচর্যায় সন্ন্যাসব্রতীদের অবদান অপরিসীম। বাংলাদেশে সর্বত্র সন্ন্যাসব্রতী সিস্টার, ব্রাদার ও ফাদারদের বাণী প্রচার ও যিশুর সাক্ষ্যদানে অংশগ্রহণ সুস্পষ্ট।

যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের সংখ্যা যেহেতু অপ্রতুল, তাই বাণী প্রচার, দীক্ষাপ্রার্থীদের ধর্মশিক্ষাদান, খ্রিস্টভক্তদের ধর্মশিক্ষা ও বিশ্বাসের পরিচর্যায় অনেক কাটেখিস্ট বিশ্বমণ্ডলীতে নিরন্তর অবদান রেখে যাচ্ছে বিশেষভাবে আমাদের ডাইয়োসিসে কাটেখিস্টগণ এসব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কাটেখিস্ট হিসেবে সেবাদানের জন্য প্রয়োজন যিশু খ্রিস্টের প্রতি গভীর ভালবাসা ও প্রচণ্ড আত্মত্যাগী মনোভাব। কাটেখিস্টরাও যিশু কর্তৃক আহূত ও প্রেরিত।

বাংলাদেশ মণ্ডলী এবং আমাদের চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে আমাদের খ্রিস্টবিশ্বাস ও খ্রিস্টবিশ্বাসীদের বর্তমান সংখ্যা অনেক অনেক বিদেশী মিশনারীর ত্যাগপূর্ণ অবদান। গত বছর আমরা উদযাপন করেছি আমাদের বিশ্বাসের ৫০০ বছর পূর্তি উৎসব। আমরা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি মিশনারী ফাদার, ব্রাদার, সিস্টার, কাটেখিস্ট ও চট্টগ্রামে আদি খ্রিস্টিয় সমাজের জীবনাদর্শ দ্বারা। পরবর্তীতে স্থানীয় মিশনারীদের অবদানের বিষয় সম্বন্ধেও আমরা অবগত আছি। ৫০০ বছরের জুবিলী উদ্যাপন আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে যে, আমরা যে বিশ্বাস লাভ করেছি, তা শুধু মাত্র নিজের কাছে রেখে দেয়ার জন্য নয়। ৫০০ বছর পূর্বে পর্তুগীজ বণিকগণের মাধ্যমে যে সুসংবাদ আমরা লাভ করেছি, তা জানার অধিকার অন্যদেরও আছে। এই সুসংবাদ প্রচারে চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে রয়েছে অগণিত সুযোগ কিন্তু যাজক, সন্ন্যাসব্রতী ও কাটেখিস্ট হিসেবে আহ্বানের তীব্র সংকটে এই সুযোগ চ্যালেঞ্জের মুখে।

০২.      চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস

চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস আয়তনের দিক থেকে বাংলাদেশের বৃহত্তম ডাইয়োসিস, যার সীমানা ২৮,৮৮১ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের ৯টি প্রশাসনিক জেলা এই ডাইয়োসিসের অন্তর্গত যেখানে প্রায় তিন কোটি মানুষের বসবাস। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর মধ্যে কাথলিক খ্রিস্টভক্তের সংখ্যা খুবই নগণ্য। চট্টগ্রামে বর্তমানে ১১টি ধর্মপল্লী এবং ২টি উপধর্মপল্লীতে মাত্র ৩২,৬৮৪ জন কাথলিক খ্রিস্টভক্ত রয়েছে। এই বিস্তৃত দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করার জন্য প্রয়োজন প্রচুর আহ্বান এবং আমাদের প্রত্যেকের দীক্ষাসস্থানের ব্রত বিশ্বস্ততার সঙ্গে পালন করার মনোভাব।

চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে বর্তমানে ৩০ জন যাজক কর্মরত আছেন যার মধ্যে ১৭ জন ধর্মপ্রদেশীয় যাজক।  ধর্মপ্রদেশীয় যাজকদের অধিকাংশই অন্য ডাইয়োসিসের সন্তান। তারা অনেকে চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন আবার অনেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই ডাইয়োসিসে সেবা প্রদান করতে এসেছেন। বর্তমানে বনানী মেজর সেমিনারীতে চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসের ৪ জন প্রার্থী রয়েছে যাদের মধ্যে ১ জন আবার ঢাকা আর্চডাইয়োসিসের সন্তান। এই পরিস্থিতি চলমান থাকলে ভবিষ্যতে আমাদের আর্চডাইয়োসিসে যাজক সংকট যে আরো তীব্র হবে তা অত্যন্ত স্পষ্ট। চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে বর্তমানে সেবাদান করছেন ১৪ জন ব্রাদার ও ৭১ জন সিস্টার। কিন্তু চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস থেকে বিভিন্ন সন্ন্যাসব্রতী সম্প্রদায়ে আহ্বানপ্রাপ্ত ব্রাদার ও সিস্টারদের সংখ্যা অত্যন্ত কম। পার্বত্য চট্টগ্রামের ধর্মপল্লীগুলো অনেক দূর্গম এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রচণ্ড ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়ও খ্রিস্টভক্তদের বসবাস আছে। প্রতি বছর সকল এলাকায় পালকীয় সফরে যাওয়ার মত ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টার আমাদের নেই। কোন কোন এলাকা আবার স্থানীয় আদিবাসী ছাড়া অন্য কারো প্রবেশ নিষিদ্ধ। এইসব এলাকায় বাণী প্রচার, দীক্ষাপ্রার্থীদের ধর্মশিক্ষাদান, খ্রিস্টভক্তদের ধর্মশিক্ষা ও বিশ্বাসের পরিচর্যায় চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে ২৪ জন পূর্ণকালীণ কাটেখিস্ট এবং ১৭৬ জন খণ্ডকালীন কাটেখিস্ট সেবাদান করে চলেছেন।

চট্টগ্রাম হতে পৃথক করে বরিশালকে নতুন ডাইয়োসিসরূপে প্রতিষ্ঠার পর চট্টগ্রামের মাইনর সেমিনারিটি বরিশালের আওতাধীন এলাকায় পড়ে যায়। চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিসে আহ্বান বৃদ্ধিতে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কাঠামো তৈরী হয়েছে। ২০১৮ খ্রিস্টাব্দে আলীকদম ধর্মপল্লীতে উদ্বোধন করা হয়েছে ডাইয়োসিসের প্রথম মাইনর সেমিনারি যার নামকরণ করা হয়েছে, ‘পবিত্র যিশু হৃদয়ের মাইনর সেমিনারি’। নোয়াখালীতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ‘ সেন্ট টমাস এপস্টলিক বোর্ডিং’। পরিকল্পনায় আছে বান্দরবানে নারী কাটেখিস্টদের জন্য আরো একটি গঠনগৃহ প্রতিষ্ঠা করার। তবে এই সকল কাঠামো খালিই পড়ে থাকবে, যদি না প্রভুর দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করার জন্য প্রার্থী পাওয়া না যায়। আরএনডিএম সিস্টারদের নব্যালয়টি সম্প্রদায় বাংলাদেশে আগমনের পর থেকেই চট্টগ্রামে আছে। কিন্তু এখানে চট্টগ্রামের প্রার্থীর সংখ্যা অপ্রতুল, মাঝে মাঝে থাকেই না। তাই এই আর্চডাইয়োসিসে আহ্বান বৃদ্ধিতে ব্যক্তি, পরিবার, সংঘ, সংগঠন, সমাজ হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের নিজ নিজ ভূমিকা পালন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

০৩.     আহ্বান বৃদ্ধিতে ভূমিকা করণীয়

ক. ব্যক্তি:

যাজকীয় ও সন্ন্যাসব্রতীয় জীবনে আহŸান লাভ একটি স্বর্গীয় আশীর্বাদ। সকলে এই আহ্বান  লাভ করে না। যাদের এই আহ্বান  আছে, ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টার হিসেবে তাদের সে আহ্বানে উদারভাবে সাড়া দেয়া প্রয়োজন। ব্যক্তি হিসেবে আমাদের নিজ জীবনের আহ্বান যাচাই করা অত্যন্ত জরুরী। ঈশ্বরের ডাকে সমূয়েল যেভাবে সাড়া দিয়েছিল, তেমনিভাবে আমাদেরও ঈশ্বরের ডাক শুনতে ও সাড়া দিতে প্রস্তুত হতে হবে। যারা যাজকীয় বা সন্ন্যাসব্রতীয় জীবনে আহ্বান লাভ করে না, তারাও ব্যক্তি হিসেবে অন্যকে আহ্বান জীবনে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। যাজকীয় গঠনে একটি লম্বা সময় ব্যয় করতে হয়। সন্ন্যাসব্রতীদের গঠনেও লাগে দীর্ঘ সময়। যাজকীয় ও ব্রতীয় জীবনের প্রার্থীদের ও পরবর্তীতে ফাদার, ব্রাদার ও সিস্টারদের ভরণপোষণের দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারেন। নিজ ডাইয়োসিসের সেমিনারিয়ানদের খোঁজখবর রাখতে পারেন। সর্বোপরি প্রার্থনা ও অন্যান্য সহযোগিতা নিয়ে যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের পাশে থাকতে পারেন সর্বদা।

খ. পরিবার:

যারা দ্রাক্ষাক্ষেত্রে কাজ করার জন্য আহূত ও নিয়োজিত, তাদের জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখি, তাদের জীবনে আহ্বানের সূত্রপাত হয় পরিবারে। তাদের জীবনে সবচেয়ে বেশী অবদান তাদের পিতামাতার উৎসাহ ও পরিবারে বিদ্যমান বিশ্বাসের আদর্শ। পরিবারে নিয়মিত প্রার্থনার অভ্যাস, সাধু-সাধ্বীদের জীবন আলোচনা, ধর্মশিক্ষা, ইত্যাদি অনুশীলনে বেড়ে ওঠা সন্তানদের যাজকীয় ও সন্ন্যাসব্রতীয় জীবনে আহ্বান খুঁজে পেতে সাহায্য করে। পরিবারে সন্তানদের সামনে যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের বিষয়ে ইতিবাচক দিকগুলো তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরী। ভবিষ্যতে যদি সে যাজকীয় অভিষেক লাভ করে বা সন্ন্যাসব্রত লাভ করে, তবে তার অন্তরে সেই ইতিবাচক দিকগুলোই কাজ করবে এবং সে একজন উত্তম যাজক অথবা ব্রতধারী হয়ে উঠতে সক্ষম হবে।

গ. সমাজ (নেতৃত্ব):

যাজকীয় আহ্বান বৃদ্ধিতে সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের যে সকল এলাকায় প্রচুর আহ্বান আছে, সেখানকার খ্রিস্টিয় সমাজের ভূমিকা অত্যন্ত প্রবল। এ’সমস্ত সমাজ জীবন পর্যালোচনা করলে আমরা দেখি, সমাজগুলোর প্রত্যেক পরিবার প্রার্থনাপূর্ণ জীবনযাপন করে এবং অন্যকেও সেই প্রার্থনার জীবনে উৎসাহিত করে। চট্টগ্রামে প্রচলিত আছে পাড়া ভিত্তিক ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় পাড়া সমাজ ব্যবস্থা। এই ক্ষুদ্র খ্রিস্টিয় সমাজের নেতৃবৃন্দের নিজ নিজ ওয়ার্ডে/ পাড়ায় আহ্বান বৃদ্ধিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। ওয়ার্ড/পাড়াগুলোতে প্রার্থনাপূর্ণ জীবন ও  ঐক্যবদ্ধ মিলনসমাজ গড়ে তোলার মাধ্যমেও আহ্বান বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ঘ. জীবন সাক্ষ্য:

যারা এই জীবনে এগিয়ে এসেছেন, তাদের জীবনাদর্শ অনেকের জন্য প্রেরণার উৎস।  যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের জীবনাদর্শে শিশু, কিশোর ও যুবক-যুবতীরা অনুপ্রাণিত হতে পারে। আবার যাজকদের আদর্শ জীবনের অভাবে মণ্ডলীর প্রতি তাদের মধ্যে বিতৃষ্ণাও জেগে উঠতে পারে। যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীগণ নিজ জীবন আচরণের মাধ্যমে শিশু, কিশোর, যুবদের কাছে কি ধরণের জীবন সাক্ষ্য দিচ্ছেন তার উপরেও আহ্বান অনেকাংশে নির্ভর করে। যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীগণের নিজ ধর্মপল্লীর যুবক-যুবতীদের সাথে পথ চলতে হবে, শিশুদের মনে আহ্বান জীবন সম্পর্কে সুন্দর উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে।  সকল যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীর একই রকম গুণাবলী থাকে না, তবে যার যে দক্ষতা আছে তা দিয়েই শিশু, কিশোরও ও যুবদের সাথে পথ চলতে হবে; তাদের  জীবনাহ্বান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে হবে।

শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, ইত্যাদি উন্নয়ন কার্যক্রমে যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীগণ নিশ্চয়ই নিবেদিত ভূমিকা  পালন করবেন। এগুলোও তাদের পালকীয় কাজের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে, যাজক ও সন্ন্যাসব্রতীদের জন্য, বিশেষভাবে যাজকদের জন্য আত্মার যত্ন নেয়াই হলো মূল বিষয়। যিশু বলেছেন, “সারা জগতকে পেয়ে কেউ যদি তার ফলে নিজের আত্মাকেই হারিয়ে ফেলে, তাতে তার কী-ই বা লাভ হতে পারে?” (মথি ১৬:২৬)

ঙ. প্রার্থনা:

যিশু খ্রিস্ট আমাদের বলেছেন, আমরা যেন আহ্বানের জন্য প্রার্থনা করি। “ফসল তো প্রচুর, কিন্তু কাজ করার লোক অল্পই! তাই ফসলের মালিককে মিনতি জানাও, তিনি যেন তাঁর শষ্যক্ষেত্রে কাজ করার লোক পাঠিয়ে দেন!” (মথি ৯:৩৭-৩৮) আহ্বান কোন ব্যক্তি মানুষের ধর্মিষ্ঠতা বা অন্যান্য গুণাবলীর কারণে প্রাপ্য অর্জন নয়। আহ্বান একটি ঐশ্বরিক অনুগ্রহ! তাই যিশু খ্রিস্টের পরামর্শ অনুসারে স্বর্গস্থ পিতার নিকট থেকেই এই অনুগ্রহ চাইতে হয়।

উপসংহার:

চট্টগ্রাম আর্চডাইয়োসিস ৫০০ বছরের পুরোনো খ্রিস্টিয় ঐতিহ্য ধারণ করছে। খ্রিস্টশহীদ ফাদার ফ্রান্সেস্কো ফার্ণান্দেজ এবং সেই সাথে আরো অনেক ধর্মশহীদের রক্তে স্নাত পূণ্যভূমি এই চট্টগ্রাম। ঈশ্বরের সেবক নমস্য ব্রাদার ফ্লেভিয়ানের মত সাধু-পুরুষ এই ডাইয়োসিসে নিজ জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং রূপান্তরিত করেছেন হাজারো মানুষের জীবন। অতীতে দেশে ও দেশের বাইরে অনেক নতুন নতুন জায়গায় এই চট্টগ্রাম থেকেই যাজক-সন্ন্যাসব্রতীগণ বয়ে নিয়ে গেছে খ্রিস্টের বাণী; ফলশ্রুতিতে ঐসব এলাকায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে  মণ্ডলী । সময়ের পরিক্রমায় এই আর্চডাইয়োসিসে  আহ্বানের গতি হয়তো বেশ অনেকটা শ্লথ হয়েছে, তবে খ্রিস্টশহীদ আর খ্রিস্টপ্রেমীদের অবদান কখনোই মুছে যাওয়ার নয়। সকল খ্রিস্টভক্তের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই আর্চডাইয়োসিস আবার একদিন মিশনারী ডাইয়োসিস হয়ে উঠবে- এই আমার দৃঢ়বিশ্বাস ও প্রার্থনা।

খ্রিস্টেতে সেবক,

আর্চবিশপ মজেস কস্তা, সি.এস.সি.

চট্টগ্রামের আর্চবিশপ