হাজারো ভক্তের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিসকে স্মরণ

গত ২৭ এপ্রিল, রবিবার, তেজগাঁও ধর্মপল্লীতে পোপ ফ্রান্সিসের স্মরণে বিশেষ খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করাসহ তাঁর প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ করেন আর্চবিশপ বিজয় এন ডি’কুরুজ ওএমআই এবং তাকে সহায়তা করেন কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও সিএসসি, বিশপ সুব্রত বি গমেজ, বিশপ থিয়োটনিয়াস গমেজ সিএসসি এবং অন্যান্য ফাদারগণ। খ্রিস্টযাগের শুরুতে বিশপ সুব্রত বি গমেজ সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিশেষ খ্রিস্টযাগের উদ্দেশ্য এবং তাৎপর্য তুলে ধরেন। এরপর আর্চবিশপ বিজয় ডি’ক্রুজ ও বাংলাদেশে ভাটিকান দূতাবাসের সেক্রেটারী মন্সিনিয়র আবেল টগো প্রয়াত পোপ মহোদয়ের ছবিতে মাল্যদান করেন। ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষার সংমিশ্রণে খ্রিস্টযাগ পরিচালিত হয়।

খ্রিস্টযাগের উপদেশবাণীতে আর্চবিশপ বিজয় বলেন, পোপ ফ্রান্সিস ১২ বছর যাবৎ দেখেছেন আমাদের কি প্রয়োজন, জগতের কি প্রয়োজন। তিনি ছিলেন পবিত্র আত্মার আলোকে আলোকিত দূরদৃষ্টিসম্পন্ন একজন জ্ঞানী  মানুষ। পোপ মহোদয়ের পালকীয় পত্র মঙ্গলসমাচারের আনন্দ, লাউদাতো সি এবং ফ্রাতেল্লী তুত্তির বিষয়ে আলোকপাত করেন। সম্প্রীতি ও শান্তির বার্তা নিয়ে ২০১৭ খ্রিস্টাব্দে পোপ মহোদয়ের বাংলাদেশে পালকীয় সফরের বিভিন্ন ঘটনাও তিনি সহভাগিতা করেন। প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের দরিদ্রদের প্রতি বিশেষ দরদ ও নম্র হয়ে সকলকে সম্মান করার যে কৃষ্টি সৃষ্টি করেছেন তা জগতে সকলের কাছে আলোকবর্তিকা হয়ে থাকবে বলে মনে করেন আর্চবিশপ।

খ্রিস্টযাগের শেষে স্মৃতিচারণমূলক সহভাগিতায় কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’ রোজারিও বলেন, পোপ মহোদয় মন্ডলীকে আপন বধূর মত ভালোবেসেছেন। পোপ মহোদয়ের শেষকৃত্যানুষ্ঠান ও তদ্পরবর্তী বিষয়গুলোতে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারিরীক অসুস্থতার জন্য তা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। তবে প্রার্থনায় একাত্ম হয়ে থাকবেন যাতে করে পবিত্র আত্মা যথার্থ ব্যক্তিকে মন্ডলী পরিচালনার কাজে নেতৃত্ব দান করেন। বাংলাদেশে ভাটিকানের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত না থাকায় তার লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনানো হয়। পরিশেষে ধর্মপল্লীর পালপুরোহিত ফাদার জয়ন্ত এস গমেজ এর ধন্যবাদ জ্ঞাপন এর পরে  আর্চবিশপ, অন্যান্য বিশপ, ইতালি ও ফিলিপাইন এর রাষ্ট্রদূত, কানাডার হাইকমিশনার, সুইজারল্যান্ডের চার্জ ডি এ্যাফেয়ার্স, ইউএনডিপি এর প্রতিনিধিসহ অন্যান্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিগণ, ফাদারগণ, সিস্টারগণ, ধর্মীয় ও সামাজিক নেতৃবর্গ এবং সর্বস্তরের খ্রিস্টভক্তগণ পোপের স্মৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। খ্রিস্টযাগে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্রাদার, সিস্টার এবং প্রায় ৩হাজার খ্রিস্টভক্ত অংশগ্রহণ করেন।

উল্লেখ্য বাংলাদেশে ভাটিকান দূতাবাসের অনুরোধে সকল ডায়োসিসেই প্রয়াত পুণ্যপিতার স্মরণে বিশেষ খ্রিস্টযাগ ও প্রার্থনা করা হয়। যেখানে হাজারো ভক্তরা তাদের প্রিয় পুণ্যপিতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসা প্রকাশ করেন।

পোপ ফ্রান্সিস বিশ্বের আলোচিত, নন্দিত ও বন্দিত নেতা। তিনি বিশ্ব বিবেক ও সম্প্রীতি ও শান্তির দূত। তাঁর মৃত্যুতে গোটা বিশ্বের মানুষ ভক্তি শ্রদ্ধায় প্রার্থনাপ্রণত হয়েছেন। মানুষের পরিবারে, ঘরে ঘরে, প্রার্থনা গৃহে তাঁর আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করেছে। তেজগাঁও গির্জায় ভক্তজনগণের স্বতঃস্ফূর্ত এবং ভক্তি ও ভালোবাসা প্রদর্শন করেছে ভক্তকূল। পরম করুণাময় তার আত্মার চিরশান্তি দান করুন।

 

Leave a Reply