গত বছর ২১ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ সভা কর্তৃক ৪ ফ্রেব্রুয়ারী দিবসটিকে “মানব-ভ্রাতৃত্ব বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস”বলে ঘোষণা করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই প্রথমবার দিবসটি পালিত হচ্ছে। এর পেছনে সাম্প্রতিককালের একটি সুন্দর প্রেক্ষাপট রয়েছে।
২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৪ ফেব্রুয়ারী, শেখ মুহম্মদ বিন জায়েদ-এর আমন্ত্রণে, ইউনাইটেড আরব এমিরেটস্ সফরকালে, পুণ্যপিতা পোপ মহোদয় আবুধাবিতে আল-হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের (কায়রো) গ্রাণ্ড ইমাম আহম্মদ আল-তায়েব-এর সঙ্গে একটি চুক্তি সাক্ষর করেন যার নাম: “বিশ্বশান্তি এবং সমবেত জীবনের জন্য মানব-ভ্রাতৃত্ব”। এটি একটি যুগান্তকারী দলিল রূপে স্বীকৃত হয়েছে গোটা বিশ্বে। এই চুক্তি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সমন্বয়ে একটি “মানব-ভ্রাতৃত্ব বিষয়ক ঊর্ধতন কমিটি” গঠন করা হয়, যার উদ্যোগে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে ১৪ মে, পোপ মহোদয়ের আবেদনে, বিশেষ “প্রার্থনা, উপবাস ও দয়ারকাজ” দ্বারা মানব-ভ্রাতৃত্ব-এর দিবসটি গোটা খ্রিষ্টমণ্ডলীতে পালন করা হয়।
পুণ্যপিতা পোপ মহোদয় কর্তৃক ৩ অক্টোবর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় আরেকটি যুগান্তকারী ও বিশ্বজনীন দলিল যার নাম: “ফ্রাতেল্লী তুত্তি”, অর্থাৎ “সকল ভাইবোন”। উক্ত দলিলে গোটা মানবজাতির
কাছে পোপ ফ্রান্সিস আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বব্যাপী “মানব-ভ্রাতৃত্ব ও সামাজিক বন্ধুত্ব” গড়ে তোলার জন্য। অসুস্থ
বর্তমান বিশ্ব। নতুন বিশ্ব নির্মাণের জন্য তিনি যে রূপরেখা তুলে ধরেছেন তাহলো সমগ্র মানবজাতি হবে একটি পরিবার আর আমরা হব সকলে ভাইবোন।
দু’বছর আগে যে বিশ্বধারণা ও বিশ্ব-রূপরেখার উম্মেষ ঘটিয়েছিলেন পুণ্যপিতা পোপ ফ্রান্সিস তারই ফলশ্রুতিতে, জাতিসংঘের সিদ্ধান্তক্রমে, এ বছর ৪ ফেব্রুয়ারী পালিত হচ্ছে “মানব-ভ্রাতৃত্ব বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবস”, যার প্রতিপাদ্য বিষয় হল: “সেই দিনের আগমনে কাজ করি আমরা সবাই মিলে।”
আবুধাবির শেখ মুহম্মদ বিন জায়েদ ও গ্রাণ্ড ইমাম আহম্মদ আল-তায়েবের সঙ্গে পোপ ফ্রান্সিস ভার্চুয়াল সভায় যোগদান করে দিনটি পালন করবেন। বাংলাদেশ সময় সকাল ৮:৩০ (রেমের সময় ১৪:৩০) মিনিটে ভাটিকান নিউজে সম্প্রচারিত হবে।
আসুন আমরা বিশ্বের সকল ভাইবোনের সাথে একাত্ম হয়ে “মানব-ভ্রাতৃত্বের আন্তর্জাতিক দিবস” দিবসটি পালন করি এই ধ্যান নিয়ে: “সেই দিনের আগমনে কাজ করি আমরা সবাই মিলে।”
কার্ডিনাল প্যাট্রিক ডি’রোজারিও, সিএসসি.
অবসরপ্রাপ্ত ঢাকার আর্চবিশপ
ফেব্রুয়ারী ৪, ২০২১ খ্রি.