বাংলাদেশ ধর্মপ্রদেশীয় যাজক  ভ্রাতৃসংঘের প্রবীণ যাজকদের নবায়ন কোর্স

‘ফিরে যাই আমাদের কালে:যাজকীয় জীবনের আনন্দ ও সৌন্দর্য’- এই মূলসুরকে কেন্দ্র করে গত ৪ থেকে ৮ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের বিশপস্ হাউজে ও বান্দরবনে প্রবীণতম থেকে শুরু করে ১৯৯০ খ্রিস্টবর্ষ  পর্যন্ত অভিষিক্ত যাজকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ ধর্মপ্রদেশীয় যাজক ভ্রতৃসংঘের প্রবীণ যাজকদের নবায়ন কোর্স। এতে বিডিপিএফ এর সভাপতি ফাদার মিন্টু পালমা ও সেক্রেটারী ফাদার রুবেন এস, গমেজসহ সমগ্র বাংলাদেশ থেকে মোট ২০ জন যাজক অংশগ্রহণ করেন।

প্রথম দিন বেশিরভাগ ফাদারগণ মধ্যাহ্ন ভোজে চট্টগ্রাম আর্চবিশপস্ হাউজে উপস্থিত হলে আর্চবিশপ সুব্রত হাওলাদর ও আর্চবিশপস্ হাউজের ফাদার-সিস্টারগণ ফাদারদের সাদরে বরণ করে নেন। আর্চবিশপ সুব্রত বলেন যে, তিনি খুবই আনন্দিত এই প্রোগ্রামের জন্য চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশকে বেছে নেওয়া হয়েছে। যে সকল ফাদারগণ এই নবায়ন কোর্সে অংশগ্রহণ করছেন বাংলাদেশ মণ্ডলীতে তাদের অবদান অনেক। তিনি এই প্রোগ্রামের সার্বিক সহযোগিতার কথা বলে সাফল্য কামনা করেন।

বিডিপিএফ সভাপতি ফাদার মিন্টু পালমা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ মণ্ডলীতে প্রবীণ যাজকদের অবদান অনস্বীকার্য। এই বয়সের যাজক বাংলাদেশ স্থানীয় মণ্ডলীতে স্বীয় স্বীয় সেবাকর্ম দায়িত্বে কাজ করে এখন যারা বিভিন্ন পালকীয় ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ, জ্ঞানে বিজ্ঞ, চিন্তা চেতনায় প্রাজ্ঞ, যাদের রয়েছে বিচিত্র কর্মযজ্ঞে পদ্ধতি যা তাদের কর্ম, ধর্ম ও সাধন সিদ্ধির লব্ধ।তাই তাদের কাজের স্বীকৃতি দেওয়া আমাদের একান্ত প্রয়োজন।প্রোগ্রামটি বৈচিত্রময় আঙ্গিকেই সাজানো হয়। এই নবায়ন কোর্সের ব্যবস্থা করতে পেরে তিনি গর্ববোধ করেন। যারা এই কোর্স আয়োজনের পেছনে বিশেষ ভূমিকা রাখছেন তাদের প্রতি তিনি তাঁর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং সকলের সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করেন।

এই কোর্সের মধ্যে ছিল ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর জনগণের সাথে খ্রিস্টযাগ উৎসর্গ, যাতে প্রধান পৌরহিত্য করেন চট্টগ্রাম মহাধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল ফাদার টেরেন্স রড্রিক্স এবং উনাকে সহযোগিতা করেন ক্যাথিড্রাল ধর্মপল্লীর পাল-পুরোহিত ফাদার রিগান কস্তা। পরে কয়েকজন যাজক উনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন বিষয়ে সহভাগিতা করেন ক) ফাদার গাব্রিয়েল কোড়াইয়া: ফিরে যাই আমাদের কালে: যাজকীয় জীবনের বৈচিত্রতা খ) ফাদার আলবিনো সরকার: যাজকীয় জীবনের আনন্দ ও সৌন্দর্য। এছাড়াও বিভিন্ন জন বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে সহভাগিতা তুলে ধরেন। এছাড়াও ছিল কর্ণফুলি নদীর তলদেশের টানেল ও পারকী সমুদ্র তীর পরিদর্শন, দিয়াংয়ে তীর্থ যাত্রা ও সাক্রামেন্তের আরাধনা, বান্দরবান ও বলিপাড়া ধর্মপল্লী পরিদর্শন, বিভিন্ন দর্শণীয় স্থান পরিদর্শন ও নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে সহভাগিতা। যেহেতু তারা সুদীর্ঘ বছর ধরে মণ্ডলীতে সেবাকাজ করে অনেক বাস্তব অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন তাই তাদের ৪ দিনের সহভাগিতায় অতীত মণ্ডলীর অভিজ্ঞতার আলোকে বর্তমান বাস্তবতা মূল্যায়নে ভবিষ্যৎ মণ্ডলীর ভাবনা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সহভাগিতা ছিল এবং অনেক জ্ঞানগর্ভ দিকদর্শন প্রকাশ পেয়েছে। নভেম্বর ৮ তারিখ সন্ধ্যায় এই অভূতপূর্ব প্রোগ্রামের ইতি টানা হয়। বান্দরবানে ও চট্টগ্রামে ফাদার সুধীর দাস সিএসসি, ফাদার সুমন কস্তা সিএসসি, ফাদার সমীর রোজারিও সিএসসি, ফাদার রিগান কস্তা, ফাদার সাধন গ্রেগরী ও ফাদার পিন্টু এই প্রোগ্রাম আয়োজনে বিশষে সহায়তা দান করেন। প্রোগ্রামের সমাপ্তি লগ্নে কয়েকজন যাজক তাদের অভিব্যক্তি ব্যক্ত করতে গিয়ে আনন্দে আপ্লুত হয়ে পড়েন এবং বলেন এই ধরণের প্রোগ্রাম যাজকীয় জীবনের জন্য সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ।  

সংবাদদাতা: ফাদার রুবেন এস, গমেজ